রবিবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১৩

ইউপি দালালদের হাতে গেল মালয়েশিয়াগামী জনগণের ভাগ্য

মালয়েশিয়াগামী সাধারণ জনগণ দীর্ঘদিন প্রতিক্ষায় আছে সরকার কখন ঘোষণা করবে আনলাইন আবেদন। আগে আসলে আগে পাবে ভিত্তিতে অনলাইন রেজিস্ট্রশন করবে। এরকম কথা থাকলেও গত কালের প্রথম আলো পত্রিকা পড়ে জানতে পারলাম এর উল্টোটা। সরকারের এত পরিশ্রম আর জনগণের এতদিনের দীর্ঘ প্রতীক্ষা, সবই কি বৃথা যাবে? দুর্নীতির খোলস থেকে বাংলাদেশ কি কোন দিনই মুক্ত হতে হতে পারবে না? সরকারের পক্ষ থেকে বার বার বলা হচ্ছে এর মধ্যে কোন দুর্নীতি থাকবে না কিন্তু যেভাবে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সাধারণ জনগণের হাতে না দিয়ে ইউনিয়ন ও তথ্য সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে তাতে করে দুর্নীতি বাড়বে ছাড়া কমবে না।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘নতুন বছর শুরুর আগমুহূর্তে আমি দেশবাসীকে একটি সুখবর দিতে চাই। মালয়েশিয়া বনায়ন খাতে (প্ল্যান্টেশন) আমাদের কাছে ১০ হাজার কর্মীর চাহিদাপত্র পাঠিয়েছে। তারা এই খাতে মোট ৩০ হাজার কর্মী নিতে চায়।’
আমরা দীর্ঘদিন যাবত আশায় ছিলাম সত্যিই সরকার নতুন বছরে একটি সুখবর দিবে। কিন্তু এখন দেখছি নতুন বছরে সুখবরের পরিবর্তে হয়রানির আর ইউপি দালালদের একটি প্রতারণার খবর পাচ্ছি। সরকার এখন বলছে, কেবল ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্রে নিজে উপস্থিত হয়ে নিবন্ধন করা যাবে। নিবন্ধনের পর ইউনিয়ন কোটা অনুযায়ী লটারি করে চূড়ান্ত প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। এতে করে দেখা যাবে চেয়ারম্যানের আত্মীয়, মেম্বারের আত্মীয়, এম.পি মন্ত্রীর আত্মীয় ছাড়া অন্য সাধারণ জনগণ সিরিয়ালই পাবে না? এজেন্সীর দালালদের হাত থেকে এবার ইউপি দালালদের হাতে গেল মালয়েশিয়াগামী জনগণের ভাগ্য। তবে আমার মনে হয় ১০,০০০ টাকার একটি সরকারী চাকুরী পেতে যেভাবে এমপি, মন্ত্রীদের সাথে লবিং করতে হয় তার চেয়ে কঠিন লবিং হবে মালয়েশিয়া যেতে। কারণ এখানে শুধু এমপি, মন্ত্রীই নয় এর সাথে যোগ হয়েছে মেম্বার, চেয়ারম্যান। আর আমি যতদুর জানি, ইউপি তথ্য সেবা কেন্দ্রের একজন কম্পিউটার অপারেটরের যে অভিজ্ঞতা, তাতে করে একটি দরখাস্ত লেখার ক্ষমতাও তাদের নেই, তাহলে তাদের দ্বারা অনলাইনে বসে রেজিষ্ট্রেশন কতটা নির্ভুল হবে তা যথেষ্ট অনুমেয়। অন্তত দেশের যে কোন জায়গা থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রেশন করা হলে এই একক ক্ষমতা পেত না ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, এম.পি ও মন্ত্রীরা। আর দুর্নীতি করারও সুযোগ পেত না।

রচনাকালঃ ২ জানুয়ারি ২০১৩ খ্রি:

কোন মন্তব্য নেই: