রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৩

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী দেশকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে


গত ২৫ নভেম্বর ২০১৩ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পনের দিন পার হয়েছে। এর মধ্যে দুটো শুক্রবার বাদ দিয়ে বাকি তের দিনই ছিল অবরোধ পাশাপাশি কাদের মোল্লার মৃত্যু পরোয়ানা জারির প্রতিবাদের দুদিন যাবত হরতাল চলছে। এই সময়ে অসংখ্যা লোকের মৃত্যু আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলছে। সরকার ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য নিজেদের ইচ্ছামত সংবিধান সংশোধন করেছে। সংবিধান থেকে নির্বাচনকালীন তত্ত্ববধায়ক সরকার ব্যবস্থা
আদালতের দোহাই দিয়ে বাতিল করেছে। যার ফলে বিরোধীদলসহ দেশের ৯০% লোক এর বিরোধীতা করছে। তত্ত্ববধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের প্রতিবাদে দীর্ঘ আড়াই বছর যাবত হরতাল, অবরোধ, লংমার্চ, সভাসমাবেশ করে আসছে বিরোধীদল এবং বার বার তারা বলে আসছে তত্ত্ববধায়ক ব্যবস্থা পূর্ণবহাল না করলে নির্বাচনে যাবে না। সর্বশেষ তাই হলো। সরকার বিরোধীদলের কোন দাবীর প্রতি কর্ণপাত করেনি। সরকার একতরফা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করল। আর তখন থেকেই শুরু হয়ে গেল বিরোধীদলের সহিংস আন্দোলন। এই আন্দোলনের ফলে বলি হচ্ছি আমরা সাধারণ মানুষ। বিরোধী দল তাদের কথামতো একতরফা নির্বাচন বর্জন করলো। সরকার আন্দোলন ঠেকাতে বিরোধীদলের নেতা কর্মীদের উপর একের পর এক হামলা মামলা করছে। মামলার ভয়ে বিরোধীদলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা গা ঢাকা দিয়েছে। সরকার তাদেরকে স্বাভাবিক প্রন্থায় আন্দোলন করার সুযোগ দিচ্ছে না। বিরোধীদলের অফিস পুলিশ কর্তৃক ভাংচুর। তারপর সর্বক্ষণ পুলিশ পাহারায় তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। এই অবস্থায় বিরোধীদল অজ্ঞাতস্থান থেকে ভিডিও্র বার্তা ও বিবৃতি পাঠিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে এভাবে যদি দেশ চলতে থাকে জানানি না এর শেষ কোথায়। কি হবে এর পরিনাম। কি হবে আমাদের দেশের ভবিষ্য‍ সরকার প্রধান বিরোধীদলকে নির্বাচনের বাইরে রেখে একতরফা নির্বাচন করতে বদ্ধপকিকর। অন্যদিকে বিরোধীদল এই নির্বাচন ঠেকাতে বদ্ধপকির। দু’দলের এই অনড় অবস্থান আমাদের দেশকে কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে তা আমরা কেউ বলতে পারি না। এই সংকটের সমাধান কীভাবে হবে, তা কেউ বলতে পারি না। বিভিন্ন সংগঠন, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও মিডিয়া এ সংকট থেকে সমাধানের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছে সরকারকে কিন্তু সরকার তা গ্রহণ করেননি। সরকারে একটি কথা তা হলো সংবিধান অনুসারেই সংসদ নির্বাচন হবে এর বাইরে তিনি যাবেন না। সংবিধান কার জন্য তৈরি হয়। নিশ্চয় জনগণের জন্য। যে সংবিধান জনগণের কল্যাণ বয়ে আনে না সে সংবিধান দিয়ে জনগণ কি করবে। সরকার তার ইচ্ছামত সংবিধান সংশোধন করবে এবং সেই সংবিধান মতো সরকার নির্বাচন করবে তা কেন জনগণ মেনে নিবে? সংবিধান সংশোধনের জন্যতো জনগণ মহাজোট সরকারকে ম্যান্ডেট দেয়নি।
লেখক- উপন্যাসিক, কলামিষ্ট

কোন মন্তব্য নেই: