চলন্তিকার আয়োজনে ও সম্পাদকের সম্পাদনায় প্রকাশিত প্রথম ই-বুক ‘‘চলন্তিকা ই-প্রকাশনাঃ সংখ্যা ১, আগস্ট ২০১৩, ঈদ সংখ্যা’’ খুব অল্প সময়ের মধ্যে সম্পাদিত এবং প্রকাশিত হলেও নবীন ব্লগারদের লেখার বৈচিত্রের কারণে প্রথম ই-বুকটি আমার কাছে অসাধরণ মনে
হয়েছে। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে এ সংকলনটি পিডিএফ ফরম্যাটে মোট ৮১ পৃষ্ঠায় ৫৭ জন লেখকের ৬০টি লেখা স্থান পেয়েছে। যার মধ্যে উদ্যোগ,
প্রবন্ধ, ছড়া, জীবনের গল্প, শিশুতোষ ও শিক্ষণীয়, কবিতা, রসরচনা, গল্প, স্মৃতিচারণ, রহস্য
গল্প, সাক্ষাৎকার, বিজ্ঞান
কল্পকাহিনী, পর্যটন, অলৌকিক গল্প, ইচ্ছে কথা ও অণুকাব্য এই ১৬টি বিভাগে বিভিন্ন ধরনের বৈচিত্রময় লেখা থাকার কারণে সকল শ্রেণীর পাঠকের কাছে দারুণ একটি ঈদ উপহার হিসেবে গণ্য হয়েছে।
প্রথমেই সম্পাদক সাহেব কাজী নজরুল ইসলামের সেই
বিখ্যাত গান ‘ও মন রমজানের
ঐ রোজার শেষে এলো খুশীর ঈদ’ দিয়ে পাঠকের মনজয় করা চেষ্টা করাছেন। এ সংকলনে প্রথম লেখাটি ছিল একটি উদ্যোগ। লিখেছেন সুমাইয়া বরকতউল্লাহ্। যিনি পেশায় একজন ছাত্রী হয়েও এই অল্প বয়সে লেখালেখি করে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পুরষ্কার অর্জন করেছেন। তিনি তার উদ্যোগটিতে বলেছেন, ‘আপনার গরিব প্রতিবেশীর ছেলে বা মেয়ের জন্য একটি ফ্রগ, একটি পেন্ট বা একটি গেঞ্জি কিনে নিয়েছেন তো?’ লেখিকা নিজে টাকা বাচিয়ে ও বাবার কাছ থেকে চেয়ে চারটি অসহায় গরীব মেয়ের জন্য চারটি জামা ও জুতো নিয়েছেন। যা নিসেন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। গরীব দুঃখীর মুখে হাসি ফুটানোর যে আনন্দ এই আনন্দ থেকে আমরা যেন কেউ বঞ্চিত না হয়। তাই সবাইকে লেখিকা এই পবিত্র আনন্দে শরীক হওয়ার জন্য আহ্বান করেছেন। এই লেখাটি পড়ে মন্তব্য করতে গিয়ে আবেগে আরিফুর রহমান বললেন, ‘‘সুন্দর উদ্যোগটি আমার কাছে খুব ভাল লাগল। এটি পরে আমার চোখের পানি চলে আসল। আমাদের সবারই আপনার মত উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।”
ঐ রোজার শেষে এলো খুশীর ঈদ’ দিয়ে পাঠকের মনজয় করা চেষ্টা করাছেন। এ সংকলনে প্রথম লেখাটি ছিল একটি উদ্যোগ। লিখেছেন সুমাইয়া বরকতউল্লাহ্। যিনি পেশায় একজন ছাত্রী হয়েও এই অল্প বয়সে লেখালেখি করে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পুরষ্কার অর্জন করেছেন। তিনি তার উদ্যোগটিতে বলেছেন, ‘আপনার গরিব প্রতিবেশীর ছেলে বা মেয়ের জন্য একটি ফ্রগ, একটি পেন্ট বা একটি গেঞ্জি কিনে নিয়েছেন তো?’ লেখিকা নিজে টাকা বাচিয়ে ও বাবার কাছ থেকে চেয়ে চারটি অসহায় গরীব মেয়ের জন্য চারটি জামা ও জুতো নিয়েছেন। যা নিসেন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। গরীব দুঃখীর মুখে হাসি ফুটানোর যে আনন্দ এই আনন্দ থেকে আমরা যেন কেউ বঞ্চিত না হয়। তাই সবাইকে লেখিকা এই পবিত্র আনন্দে শরীক হওয়ার জন্য আহ্বান করেছেন। এই লেখাটি পড়ে মন্তব্য করতে গিয়ে আবেগে আরিফুর রহমান বললেন, ‘‘সুন্দর উদ্যোগটি আমার কাছে খুব ভাল লাগল। এটি পরে আমার চোখের পানি চলে আসল। আমাদের সবারই আপনার মত উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।”
তারপর যে লেখাটি
প্রকাশ হয় তা একটি ঈদের ছড়া। এটি আমার নিজের লেখা।
ছড়াটির নাম ‘খুশীর ঈদ’। শিশু-কিশোরদের উপযোগী করে এ ছড়াটি লিখেছি। এর সমালোচনার
দায়িত্ব আপনাদের হাতে ছেড়ে দিলাম। তার পরই একটি কবিতা লিখেছেন এমদাদ হোসেন নয়ন। কবিতার নাম ‘বুক পকেট’। কবি এখানে তার প্রেয়সীর ডালিম
পাকা ঠোঁটের মিষ্টি হাসি কবির বুক পকেটে জমা রাখার ইচ্ছা পোষন করছেন। সপ্নিল রায় লিখেছেন ‘হাওয়াই বাঁশি’ নামে একটি ছড়া। যিনি ভালোবেসেছেন এই মাটিকে এবং
ভালবেসেই যাবেন। এই ছড়ায় তিনি স্কুল জীবনের স্মৃতিচারণ করে সবাইকে কানামাছি খেলার
আহ্বান করেন।
শিকদার এর স্মৃতিচারণ ‘শৈশবের সেই গান...’। এখানে লেখক শৈশবে জ্যাঠাতো
ভাই-বোনেরা যে বিখ্যাত গান গুলি গাইতো তা স্মৃতিচারণ করেন সুন্দর ও সাবলীল ভাষায়। বিশেষ
করে লেখকের ছোট ফুফু প্রায় একটা গান গাইতঃ ‘গুন গুনাগুন গান গাহিয়া নীল ভ্রমরা যায়।’ আর একটি গান
এখনও মনে পড়ে লেখকের ‘আগুন জ্বলেরে আগুন নিভানোর মানুষ নাই...।’ লেখকের ভাষায়, “গ্রামে গ্রীষ্মের কাঠ
ফাটা রোদে যখন পুকুর খাল বিল শুকিয়ে যেত তখন চারদিকে পানির জন্য হাহাকার শুরু হয়ে
যেত। বড়রা মাঠে কড়া রোদের মধ্যে খোলা মাঠের উপর বৃষ্টির জন্য নামায
পড়ত। তখন নামায শেষে গায়ের
পড়নের জামা উল্টিয়ে পড়ত। তারপর দুই হাত যতটুকু উপরে উঠানো সম্ভব ততটুকু উপরে উঠিয়ে
আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করত। এতে দেখেছি প্রায় সময় আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামত। এদিকে গ্রামের তরুণ তরুণীরা গ্রামের প্রতিটি ঘরে ঘরে যেয়ে চাল, মিঠাই, মসলা চেয়ে নিত। তরুণরা সেগুলি রান্না করে
সিন্নি পাকাত। তরুণীরা নতুন শাড়ি পেচিয়ে পড়ত। আচলটা কোমড়ে গুজে কোমরে পানি
ভরা কলসি নিয়ে নাচত আর গান গাইত- ‘আল্লাহ মেঘ দে পানি দে, ছা্য়া দেরে তুই আল্লাহ
মেঘ দে…।’ নাচের তালে তালে কলসি থেকে পানি
পড়ত আর সেই পানি যেখানে মাটিতে পড়ত, সেখানে কয়েকজন তরুণী দুই হাতে মাটি লেপত আর
গান গাইত। তারপর নাচ গান শেষ হলে
চলত সিন্নি খাওয়ার ধাক্কাধাক্কি। আমরা যার যার কলা পাতা ছিড়ে নিয়ে আসতাম। সেই কলা পাতা সামনে রেখে মাটিতে
বসতাম। তরুণরা পাকানো সিন্নি সেই
কলা পাতায় ঢেলে দিত আমরা মজা করে খেতাম।” লেখকের এই বর্ণনাটি আমাকেও সেই কিশোরকালে ফিরিয়ে নিয়ে
যায়। এছাড়া ও আরো কয়েকটি পুরানো গানের কথা এখানে লেখক উল্লেখ করেছেন।
কে এইচ
মাহবুব
লিখেছেন ছড়া ‘খোকন সোনার ঈদ’। ১২ লাইনের ছোটদের উপযোগী করে চমৎকার একটি ছন্দের তালে এই ছড়াটি লিখেছেন। তার
পরেরটিও ছড়া। সেটি লিখেছেন মোঃ শাহিনুর রহমান।
ছড়ার নাম ‘আমার সবুজ পাখি’ এখানে ছড়াকার ছোটদের উপযোগী করে পাখি প্রেমের দারুণ
একটি দৃশ্য তুলে ধরেছেন। মোস্তাক আহমেদ লিখেছেন
গল্প ‘শেষ বিকালের আলো’। যিনি বই পড়তে ও স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। প্রচণ্ড মাথা যন্ত্রণা
দিয়ে গল্পটি শুরু করলেও বন্ধুত্বের বন্ধন দৃঢ়ভাবে ফুটে উঠেছে এই গল্পে। শাহরিয়ার
সজিবের
লেখা কবিতা ‘মোরা দুইজন’ এখানে প্রেমিক-প্রেমিকার আকুতি ফুটে উঠেছে। যারা এমন একটি
জায়গা খুঁজছে যেখানে থাকবে না বাঁধা।
বিএম
বরকতউল্লাহ্ যিনি বাবার কাছ থেকে লেখালেখি শিখছেন। ইতোমধ্যে তাঁর ছয়টি গল্পের বইও
প্রকাশ হয়েছে ও বেশ কয়েকটি পুরষ্ককার অর্জন করেছেন। সেই লেখক ‘কঙ্কাল’ নামে একটি
রহস্য গল্প লিখেছেন। যেই গল্পের পড়তে পড়তে রহস্য লুকিয়ে আছে। লেখক এখানে এক
কঙ্কালের রহস্যময় কাহিনী সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন। গল্পটি পড়লে সবার ভয়ে গা ছম
ছম করবে। গভীর রাতে দরগারবন গ্রামে এক কঙ্কাল এসে ঘোরাফেরা করে, লম্বা লম্বা কদম
ফেলে বাড়ি ঘরের সম্মুখ দিয়ে নীরবে হাঁটা চলা করে। এ রহস্যময় দৃশ্য দেখে গ্রামের
ছোট-বড় সবার চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। অবশেষে এক সাধারণ পুরুষ মোঃ বদিউজ্জামান
ওরফে বইদ্দা নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে এই রহস্যের সমাধান হয়। পরিশেষে মোঃ
বদিউজ্জামান ওরফে বইদ্দাকে দরগারবন গ্রামের লোকজন বীর পুরুষ খেতাবে ভূষিত করেন।
কবিতার জন্য জীবন
ও মানবতার জন্য যিনি যুদ্ধ করছেন তিনি হচ্ছেন- সালমান
মাহফুজ। যার কবিতা ‘তোমার চলে যাবার পদধ্বনি’। এখানে কবির কাছে সবই অস্পষ্ট হয়ে
গেছে কিন্তু আজো প্রেয়সীর চলে যাবার পদধ্বনি অস্পষ্ট হয়নি।
এস
ইসলাম
এর প্রবন্ধ ‘বনলতা সেন’কে ঘিরে অনেক অমীমাংসিত প্রশ্ন!!!’ যিনি কবি শফিকুল ইসলাম
নামে পরিচিত। যিনি বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারে উপসচিব। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের
গীতিকার। ইতোমধ্যে সাহিত্যের ক্ষেত্রে অবদানের জন্য তিনি ‘নজরুল স্বর্ণপদক’
প্রাপ্ত হন। এত বড় মাপের একজন লেখকের লেখায় আমার মতো একজন খুদে লেখকের সমালোচনা
করার সাহস পাচ্ছিনা। তবুও দুয়েকটি কথা না বললেই নয়। এখানে প্রবন্ধকার জীবনানন্দের “বনলতা সেন’ কবিতার মাঝে ইতিবাচক
কিছুই খুঁজে পেলেন না।
যা অত্যন্তই একটি একপেশে প্রবন্ধ হয়ে রইল। এখানে পুরো লেখাটিই বিদ্বেষমূলক মনে হচ্ছে। কবিতা আমরা বুঝি না, উপলব্ধি করি। একটি কবিতা পড়ে বিভিন্ন পাঠক বিভিন্ন অর্থ বুঝবে এটাই স্বাভাবিক। এতে এতো সমালোচনার কি আছে।
আবু
আশফাক
এর ছড়া ‘যুবক তুমি’। ছড়াকার
এখানে একজন যুবকের বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তুলেছেন। জীবনের গল্প ‘জীবন যুদ্ধ!!’। লিখেছেন নিজাম
মজুমদার নিজু। ইচ্ছা
শক্তি যে মানুষকে কত দূর নিয়ে যেতে পারে তা ফুটিয়ে তুলেছেন গল্পকারের জীবনের গল্পে।
গল্পকারের বাবা বার বার বিপদের সম্মুখীন হয়েছে তারপরও তাঁর জীবন যুদ্ধ থামেনি।
গল্পের পরিসর ছোট হলেও একজন বাবার সারা জীবনের জীবন যুদ্ধের করুণ চিত্রটি ফুটে
উঠেছে এখানে।
নোমান
রহমান
এর কবিতা ‘উদ্যানে নাস্তির ফুল’ আট লাইনে চমৎকার কিছু আবেগ ফুটিয়ে তুলেছেন এখানে। কাউছার আলম পেশায় একজন ছাত্র। তার জীবনের দুঃখের চিত্রটি
ফুটিয়ে তুলেছেন ‘দুঃখ দেখেছি’ কবিতায়। চারু মান্নান।
অতি বড় মাপের একজন লেখক। কবিতা ‘শুধু বেঁচে থাকার জন্য নির্মোহ নগর যাপন’। গ্রীষ্ম
ঋতুর বৈশিষ্ট্য এখানে ফুটে উঠেছে।
ঋণ শোধের সামান্য
প্রয়াস হিসেবে কবি বাংলাদেশী উপহার দিয়েছেন কবিতা
‘তোমাকে ভালোবাসব বলে’। প্রেমিকাকে নিয়ে কঠিন অনুভূতি গুলো এখানে কবি সুন্দর করে
উপস্থাপন করেছেন। আমাদের মাননীয় সম্পাদক মহোদয়
লিখেছেন পর্যটন বিষয়ক লেখা ‘হিলারি তেনজিং-এর এভারেস্ট জয়ের ৬০ বছর’। এভারেস্ট
জয়ের ৬০ বছরের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরেন অত্যান্ত সাবলীল ভাষায়। যেখানে
বাংলাদেশের প্রথম এভারেস্ট জয়ী মুসা ইব্রাহিম ও আরেকজন এভারেস্ট জয়ী যিনি ফেরার
পথে মারা যান সজল খালেদের কথাও উঠে আসে। এর মধ্যে দুইজন নারী আছেন যারা আমাদের দেশ
থেকে গিয়ে এভারেস্ট জয় করে ফিরছেন। পুরো বিষয়টি এত তথ্যসমৃদ্ধ যে এটি না পড়লে অনেক
কিছুই অজানা থেকে যাবে।
সুখ নয় দুঃখকে
যিনি বেশী ভালবাসেন তিনি হচ্ছেন মোঃ আমিনুল ইসলাম।
তাঁর ‘ভালোবাসা’ কবিতায় দুঃখের পরিবর্তে চমৎকার ভালোবাসার আকুতি ফুটে উঠেছে। বর্ষা নিয়ে
‘বর্ষার জলে’ কবিতা লিখেছেন মোসাদ্দেক। লেখায় কিছুটা
বৈচিত্র আসার জন্য বর্ষার প্রকৃতি উঠে এসেছে তার কবিতায়।
প্রবন্ধকার আযাহা সুলতান ‘বাকরুদ্ধ’ প্রবন্ধে লিখেছেন, “মানুষ যা
হতে চায় তা হতে পারে না, যা কল্পনা করে না তা হয়ে যায়” তিনি কেন লেখেনে তা নিজেও
জানে না। লেখালেখির ক্ষেত্রে কাউকে অনুসরণ ও অনুকরণ করার পার্থক্য সুন্দর করে
বুঝিয়েছেন। লেখালেখিতে নিজস্ব ভাবধারা থাকা বলে মনে করে লেখক। সমালোচককে তিনি
ভালোবাসেন। কারো ঘৃণা পেতে বা কাউকে ঘৃণা করতে এ পৃথিবীতে আসেননি তিনি। পরিশেষে প্রবন্ধকারে
বাকরুদ্ধ প্রবন্ধটি পড়ে আমি নিজেও বাকরুদ্ধ হয়ে যায়।
শ্যাম
পুলক
‘একি শুন্য দিয়ে শুন্যকে ভাগ’ করেছেন তাঁর কবিতায়। এটি সবার কাছে ভাল লাগবে। আলামগীর কবির একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেন।
চাকুরীর পাশাপাশি গল্প লিখেন। শিশুদের জন্য ‘রাজার ভেলা’ নামে এক শিক্ষণীয় ও
শিশুতোষ গল্প লিখেছেন তিনি। গল্পকার এখানে অত্যান্ত সুন্দর ভাবে সকলে মিলে আমরা
যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি তাহলে জীবনে কোন সমস্যা হবে না এ কথাটি শিশুদেরকে সাবলীল
ভাষায় বুঝিয়েছেন। গৌমূমোকৃঈ যার নামের সংক্ষিপ্ত
রূপ। পুরো নামটি দিলে ভাল হতো। যিনি ভালোবাসেন মানুষকে। তিনি লিখেছেন ‘অভিনয়’
কবিতাটি। পৃথিবীটা আসলে একটা নাট্যমঞ্চ। এখানে আমরা সবাই জন্ম থেকেই অভিনয় করছি
একথাটি অভিনয় কবিতায় কবি বুঝাতে চেয়েছেন বলে আমার মনে হয়।
‘হরিদাসের প্রেম
লিখেছেন’ গল্পকার শাওন রশিদ। গল্পটি পরিসর ছোট হলেও
গল্পকার এখানে মজার একটি প্রেমের কাহিনী তুলে ধরেছেন। ‘মরণের ঘাটি’ লিখেছেন শাহ্ আলম বাদশা। কবি শিশু সাহিত্যিক হিসেবে বেশ খ্যাতি অর্জন করছেন।
কবিতাটিতে কবির শকুনকে নিয়ে ছন্দের খেলা সবার কাছে ভালো লাগবে।
এরপর লিখেছেন আরিফুর রহমান। যিনি শখের কারণে লিখেন। বাবা ও মাকে নিয়ে
দুটো কবিতা এখানে প্রকাশ হয়েছে। যেমন ‘বাবা’ কবিতায় কবি সন্তান তার বাবার প্রতি যে
কত টান তা ছন্দের তালে তালে মিলিয়েছেন। তারপর ‘মা যে আমার’ কবিতায় কবির মায়ের
প্রতি মমত্ববোধ চমৎকার ভাবে তুলে ধরেছেন।
রসরচনা। যেই রচনা
পড়লে মনে রস এসে যায় সেই রসরচনাটি লিখলেন বদরুল হোসেন। ‘আমে’র যা দাম!’
শিরোনামে তিনি রসাত্ববোধক করে আমের বর্তমান বাজার দরের কথা উল্লেখ করেছেন। ছোট সময়
আমরা বইয়ে পড়তাম আম পাকে বৈশাখে কিন্তু এখন বাস্তবে দেখছি সারাবছরই আম পাকে। এর
কারণ ফরমালিন। ফরমালিন মেশানোর কারণে এখন আমে মাছিও বসে না কিন্তু সেই আম আমরা এখন
টাকা দিয়ে কিনে খাচ্ছি।
পরের গল্পটি লিখেছেন
জুবায়ের হুসাইন। যিনি মূলত গল্প ও উপন্যাস লিখতে
স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। চার পাতার ‘মৃদু দীর্ঘশ্বাস’ গল্পে হাসমত উল্লাহর কষ্টের
জীবনের চরম বাস্তবতা ফুটিয়ে তুলেছেন গল্পকার। দুয়েকটি বানান ভুল আছে। কিছুটা
রাজনৈতিক আলোচনা এ গল্পে পরিলক্ষিত হয়েছে এবং তা বিশেষ একটি দলকে নিয়ে। সব মিলিয়ে
গল্পটি চমৎকার হয়েছে।
আলমগির সরকার লিটন কবিতা
‘শীতলবালির মাঝে ধুধু নিঃঅন্তর’। অত্যান্ত
সুন্দর কিছু অনুভূতি কবি এখানে উপস্থাপন করেছেন। কবির ভাবনার গভীরতা মুগ্ধ করবে
সকলকে। পরের কবিতা ‘কানে গুজেছি একটা হেডফোন’ লিখেছেন রূপা।
কবিতাটির শুরুতে লেখা হয়েছে কানে গুজেছি একটা হেডফোন/ তাইতো আমি শুনতে পাই না/
পথের ধারে অসহায় কোন পথশিশুর/ ক্ষুধার জ্বালার বুকফাটানো আর্তনাদ। কবি ব্যতীত
হৃদয়ে মর্মস্পর্শী ও বাস্তব কথা গুলো গুছিয়ে এখানে বলেছেন।
এটি এম মোস্তফা কামাল
লিখেছেন ছড়া ‘বোনাস’। চার লাইনে চমকার ছন্দের তালে ঈদকে নিয়ে লিখলেন বোনাস। ‘আমি কিছু
বললে দরজা বন্ধ করে’ এই কবিতাটি লিখেছেন যিনি কবিতা লিখতে ও নাটক পড়তে ভালোবাসেন
সেই কবি মোঃ মোহাইমিন আহমেদ। চৌদ্দ
লাইনের কবিতায় শিরোনামের সাথে কবিতার বিষয়বস্তু অস্পষ্ট মনে হয়েছে। পুরো কবিতায়
একটি মাত্র দাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে। দাড়ি কমার ব্যবহারটা ঠিকমতো দিতে পারলে
কবিতাটি আরো চমৎকার হতো। পরের
কবিতাটি আব্দুল্রাহ আল নোমান দোলন এর ‘চির যৌবনা’।
টাকা-ডলার-রুপী চিরদিনই চিরযৌবনা থাকে একথাটি কবি তার কবিতার ভাষায় বুঝাতে
চেয়েছেন।
জিল্লুর রহমান যিনি
পেশায় একজন প্রকৌশলী। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে তিনি লেখেন। বর্তমানে তাঁর উপন্যাসের
সংখ্যা ১৮টি। তাঁর জীবনের গল্প ‘বিয়ে বিয়ে খেলা’। এখানে
গল্পকার তাঁর গল্পে যেমন একজন কন্যাদায়গ্রস্থ পিতার অসায়ত্বের চিত্র তুলে ধরেছেন, তেমনি
তুলে ধরেছেন একজন অসহায় নারীর করুণ বাস্তব কাহিনী। আজ নারী সর্বক্ষেত্রে অবহেলিত হচ্ছে। সন্তান না থাকার কারণে যেমন
স্বামীর কাছে নারীর মূল্য নেই, তেমনি কন্যা সন্তান বেশী হওয়ার কারণে বাবার কাছে নারীর কোন মূল্য নেই। এই বাস্তব কাহিনীটি গল্পকার অত্যান্ত সুন্দর সাবলীল
ও আঞ্চলিক ভাষায় ফুটিয়ে তুলেছেন। পাশাপাশি বাল্য বিবাহ ও একাধিক বিবাহের চিত্রও এখানে ফুটে উঠেছে।
‘শিরোনামহীন
কষ্ট’ নামে কবিতা লিখেছেন বৈশাখী ঝড়। ছোট
বেলা থেকেই বিভিন্ন প্রতিকুল আবহাওয়ায় তিনি বড় হয়েছেন। তিনি কখনো সত্য বলতে এক পা
পিছু হাঁটেননি। বিরহ কাতর কবি এখানে তাঁর মনের কষ্টের কথাগুলো কবিতার ভাষায়
বুঝিয়েছেন। পরের কবিতা ‘অনুভব’। লিখেছেন মুহাম্মাদ জামাল
উদ্দিন আরিফ। কবি
এখানে প্রেমীকাকে নিয়ে তিন ধরনের অনুভবের কথা উল্লেখ করেছেন। কবি একবার অনুভব করেন
তাঁর মুখ, কান, হাত, পা, মন ও চক্ষু দিয়ে প্রেমীকাকে দেখছেন। আবার
অনুভব করেন প্রেমীকার মুখ, কান, হাত, পা,
মন ও চক্ষু দিয়ে কবি নিজেকে দেখছেন। আবার
অনুভব করেন প্রেমীকার মুখ, কান, হাত, পা,
মন ও চক্ষু দিয়ে প্রেমীকা নিজেই নিজেকে দেখছেন।
সব কিছু মিলিয়ে কবিতাটি অনেকের কাছে হাসির খোরাক হয়েছে।
আহমেদ ইশতিয়াক যিনি
কিছুই পারেন না কিন্তু ভাল গল্প লিখতে পারেন। তিনি চলন্তিকার জন্য গল্প লিখলেন
‘প্রথম কদম ফুল’। এই গল্পে হুমায়ূন আহমেদের স্টাইল লক্ষ্য করেছি। নীলিমা ও রুদ্রের
কদম ফুল বিনিময় নিয়ে দারুন একটি ছোট গল্প হয়েছে।
পর্যটন
বিষয়ক লেখা ‘তারুয়া সমুদ্র সৈকত যেন কক্সবাজার-কুয়াকাটাকেও হার মানিয়েছে!!!’। কে
লিখেছেন তা এখানে উল্লেখ নেই। তবে এই লেখাটি পূর্বে একবার পরেছি আমার যতদূর ধারণা
লেখাটি লিখেছেন চলন্তিকার সহ-সম্পাদক মুহাম্মদ আনোয়ারুল
হক খান। এই সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধান নিয়ে এই লেখাটি লেখা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন যাবত সরকারে এ সমুদ্র সৈকতটিকে একটি পর্যটন এলাকা
হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু এ ব্যাপারে কোন সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ
করা হচ্ছে না।
কবিতার
নাম ‘প্রিয় বাংলাদেশ’। লিখেছেন
পৃথিবী জুড়ে স্বপ্ন।
এটি তাঁর ছদ্ম নাম। এখানে কবি তার কবিতায় বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দৃশ্য ফুটিয়ে
তুলেছেন। পরে পর্যটন বিষয়ক আরেকটি লেখা ‘রূপে ঝলমল নিঝুম দ্বীপ’। লিখেছেন মোঃ অলিউর রহমান।
নিঝুম দ্বীপের সৌন্দর্য লেখকের ভাষায় এখানে ফুটিয়ে তুলেছেন। অতএব আসুন আমরা সময়
এবং সামর্থ থাকলে একসময় নিঝুম দ্বীপের সৌন্দর্য উপভোগ করে আসি।
ফিদাতো মিশকা লিখেছেন গল্প
‘তুমি রবে নিরবে- প্রেমের গল্প, দ্রোহের গল্প’। যার জীবনের বড় একটা স্বপ্ন
লেখালেখি করা। গল্পের নামটা সুন্দর হলেও নামের সাথে প্রেমের গল্প, দ্রোহের গল্প
কথাটা নামের সৌন্দর্যকে অম্লান করে দিয়েছে। এটি একটি প্রেমের গল্প। গল্পকার গল্পটি
উৎসর্গ
করেছেন তাঁর প্রেমিকা বর্ষাকে যার মুখের একটি শব্দ শুনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা
করেন তিনি।
রফিক আল জায়েদ যিনি
নিজেকে বিখ্যাত কোন লেখক মনে করেন না। তিনি লিখেছেন ছড়া ‘আজ বাড়ী যাচ্ছি’। ছড়াকার
তাঁর নিজ বাড়ীতে যাওয়ার কথাগুলো ছড়ার ছন্দে এখানে উপস্থাপন করেছেন। ছড়াটি সবার মন
কেড়ে নিবে বলে আমার বিশ্বাস। মোঃ মাসুদ ফেরদৌস এর
‘তিনি এবং একটি দুঃস্বপ্ন’। এখানে
গল্পকার অল্পকথায় দুঃস্বপ্নের কাহিনী
তুলে ধরেছেন।
ইচ্ছে
কথা ‘যা পারিনি আমি...’। লিখেছেন শওকত আলী বেনু। মাত্র
বিশ লাইনে বাবা সন্তানের ভালোবাসা বাবা দিবসকে সামনে রেখে ফুটিয়ে তুলেছেন। তবে
প্রতিটা বাক্য লেখার পর কোন স্পেস না থাকায় লেখার সৌন্দর্য কিছুটা নষ্ট হয়েছে।
সাফাত মোসাফি যিনি
সাধারণ একটা ছেলে। সবসময় তিনি সাধারণ থাকার চেষ্টা করেন। ‘ঘর’ শিরোনামে ছোট
গল্পটির মূল চরিত্র তমাল ও মাহি। তারা একে অপরকে ভালোবাসে। ভালোবেসে স্বপ্ন দেখে একদিন
তারা ঘর বাঁধবে। সেই ঘর জুড়ে থাকবে শুধুই ভালোবাসা। তবে এখানেও প্রতিটা বাক্য
লেখার পর কোন স্পেস না থাকায় লেখার সৌন্দর্য কিছুটা নষ্ট হয়েছে।
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
এর ছড়া ‘নেশাখোর চোর’। নেশা করে চুরি করতে গিয়ে হয়েছে কি দশা ছড়ার ছন্দে তা এখানে
সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। মোঃ ওবায়দুল ইসলাম
লিখেছেন গল্প ‘শশুর বাড়ির পিঠা’। সুন্দর একটি নাম দিয়েছেন গল্পকার। গল্পের ছলে তিনি
শশুর বাড়িতে পিঠে না খাওয়ার আক্ষেপ বর্ণনা করলেন সরল সাবলিল ভাষায়।
আহমেদ
ফয়েজ
যিনি লেখেন, পড়েন কিন্তু লেখা হয় কিনা ওনি নিজেও জানেন না। কাজ করেন এনজিওতে।
পাশাপাশি একটি পাক্ষিক পত্রিকার সহকারি সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন প্রায় ১০ বছর
যাবত। তাঁর কবিতার শিরোনাম ‘ভালোবাসাবাসি’। কবির দৃষ্টিতে ভালোবাসার চারটি সংজ্ঞা
উক্ত কবিতায় তুলে ধরেছেন। আশা করি কবিতাটি সবার মন কাড়বে।
‘বৃষ্টি নিয়ে
অণুকাব্য’ লিখেছেন অঙ্কুর। শিরোনাম দেখেই বুঝা যায় বৃষ্টি
ছাড়া এখানে অন্য কিছু নেই।
‘হুমায়ুন আহমেদ এর
প্রথম সাক্ষাৎকার’টি সংগ্রহ
করেছেন আনোয়ার জাহান ঐরি। এই সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন শাকুর
মাজিদ। এখানে লেখিকার কোন অবদান নেই তাই এটিকে সমালোচনার
উর্ধ্বে রাখা হল। মোঃ কামরুল ইসলাম যার আত্মার খাদ্য সঙ্গীত। তিনি লিখেছেন
ছড়া ‘হিমুর শোকে লক্ষ হিমু কাঁদে’। নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন
আহমেদের অমর সৃষ্টি ‘হিমু’। হিমুর স্রষ্টার মৃত্যুতে হিমু চরিত্রটি আর আমাদের কাছে
আসবে না। হিমু ভক্ত কবি তার কবিতায় হিমুর শোকে যে লক্ষ হিমু কাঁদে তা ফুটিয়ে তুলে
ধরেছেন ছড়ার ভাষায়।
রসরচনা
‘আমাদের ফেলুবাবু’ লিখেছেন স্বনিল রায়। সাধু
ভাষায় লিখিত রসচনাটির মূল চরিত্র ফেলুবাবু বার বার ফেল করার পর হঠাৎ করে মেডেল
সহকারে পাশ করে ফেলে। যার রহস্য উদঘাটন হয় গল্পের শেষে। অবশেষে পাঠক জানতে পারে
ফেলুবাবু হেডমাস্টারের রূমে ঢুকে চুরি করে প্রশ্নপত্র এনে পরীক্ষা দেওয়াতে এই
মেডেল সহকারে পরীক্ষায় পাশ করার কাহিনী।
মোহাম্মদ
আনোয়ারুল হক খান যিনি নিজে যেমন স্বপ্ন দেখেন, তেমনি অন্যকে স্বপ্ন
দেখাতে চান। লেখালেখির সাথে যার রক্তের টান আছে তিনিই পারেন এমন একটি চমৎকার ‘ঈশ্বরীয় আবেশ’ নামে বিজ্ঞান কল্পকাহিনী শুনাতে। যা আপনারা না পড়ে মজা পাবেন না।
অনিকেত
আহমেদ
যার খুব ইচ্ছে বেদুইন কবি হওয়ার। তিনি লিখেছেন অলৌকিক গল্প ‘দেওগাঁ’য়ের গণকবর’। এখানে গল্পকার গল্পকথকের জবানিতে গল্পটি শুরু করেন ঠিকই
কিন্তু কথকের নামটি দিতে পারেননি। কথকের নামটি থাকলে আরো সুন্দর হতো। তৌহিদ উল্ল্যাহ শাকিল তিনি যশ খ্যাতির পিছনে কখনো ছুটে
চলেননি তিনি লিখেছেন গল্প ‘চোখের কোনে জল’। অন্তু নামক বালকটির জীবনের
খুবই নিদারুণ কষ্টের কাহিনী এখানে তুলে ধরা হয়েছে। যার চোখের সামনে নানা ও বাবাকে
মৃত্যু মুখে পতিত হতে দেখেছে। এ গল্পে বুঝানো হয়েছে যে, মানুষ মরণশীল। একদনি
সবাইকে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে। কেউ থাকবে না এখানে। মানুষ মরে যায় কিন্তু
তার আদেশ উপদেশ থেকে যায়।
সবশেষে লিখেছেন এ হুসাইন মিন্টু যাঁর পুজি কলম। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ
চারটি। যার গল্পের নাম ‘দিবসহীনদের গল্প, ওরফে চেঙ্গু’। বাবা দিবসকে কেন্দ্র করে
এই গল্পে পটভূমি তৈরি করেছেন গল্পকার। যারা অসহায় গরীব দুথী। যাদের নুন আনতে
পান্থা ফুরায় তাদের কাছে কোন দিবসের মূল্য নেই। তারা জানেওনা দিবস কি? আর সেটা হোক
না বাবা বা মা দিবস।
নতুন-পুরাতন ব্লগারদের লেখা নিয়ে
ই-বুক চলন্তিকা
ই-প্রকাশনাঃ সংখ্যা ১, আগস্ট ২০১৩, ঈদ সংখ্যা। ঈদকে কেন্দ্র করে ই-বুক হলে ঈদ
সংক্রান্ত লেখা তেমন লক্ষ্য করা যায়নি। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায়
পাঠকদের আগ্রহ
বিভিন্ন
রকম হয়। তাই লেখাগুলোকে সূচীতে যেভাবে উদ্যোগ, প্রবন্ধ, ছড়া, জীবনের গল্প, শিশুতোষ ও শিক্ষণীয়, কবিতা, রসরচনা, গল্প, স্মৃতিচারণ, রহস্য গল্প, সাক্ষাৎকার, বিজ্ঞান কল্পকাহিনী, পর্যটন, অলৌকিক গল্প,
ইচ্ছে কথা ও অণুকাব্য ১৬টি অধ্যায় বা
খন্ডে ভাগ
করা
হয়েছে ভেতরে সেভাবে উপস্থাপন করলে পাঠকরা নিজেদের মতো করে আলাদা
আলাদা সাহিত্যের স্বাদ গ্রহন
করতে পারতেন বলে আমার বিশ্বাস। তাছাড়া প্রায় লেখাতেই
বানানের সমস্যা লক্ষ্য করেছি। আমার মনে হয় ব্লগারদের লেখাগুলো এখানে হুবহু তুলে
দেয়া হয়েছে। সম্পাদনা করে ই-বুকটি প্রকাশ করতে পারলে আরো ভালো হতো। চলন্তিকা
যেহেতু একটি নবীন ব্লগ সেহেতু এখানের লেখকরা বেশীরভাগ নবীন। দুয়েকজন প্রবীন লেখককে
এখানে লক্ষ্য করেছি। এখানে প্রথম ও ঈদ সংকলনে স্বল্প সময়ে উপস্থাপন করায় মানের
প্রশ্ন তুলাটা হবে গৌণ। তা সত্ত্বেও কিছু কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ আছে সত্যিই উচুমানের।
তবে এখানে নতুন মাত্রা পেয়েছে লেখার সাথে পাঠক-পাঠিকাদের মন্তব্য প্রকাশ করায়। সব
কিছু মিলিয়ে এবারের ঈদে এটি একটি সেরা ই-বুক হয়েছে। এর প্রচ্ছদটা অনেক সুন্দর ও
আকর্ষনীয় হয়েছে এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু কে প্রচ্ছদটি তৈরি করেছেন তার নাম নেই।
থাকলে আরো ভালো হতো। আমি ধন্যবাদ জানাই চলন্তিকার সম্পাদক, সহ-সম্পাদকসহ
অংশগ্রহণকারী সকল লেখককে যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম করে অল্প সময়ে এতগুলো লেখা সমন্বয়
করে যথাসময়ে সংকলনটি প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছেন।
আমি একজন সাধারণ
লেখক। লেখক হতে পেরেছি কিনা সেই বিচারের ভার আপনাদের হাতে ছেড়ে দিলাম। আমি আমার মতোই করে আপনাদের
মূল্যবান লেখাগুলো পড়েছি এবং নিজে বুঝার চেষ্টা করেছি। অনেক লেখার মর্মার্থ আমার
পক্ষে বুঝা সম্ভব হয়নি। তবু যেহেতু এটি একটি পর্যালোচনা সেহেতু চেষ্টা করেছি নিজের মতো করে
সমালোচনা করতে। এতে যদি কারো মনে আঘাত লাগে তাহলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
পরিশেষে সবাইকে
আমি অনুরোধ করব যারা এখনও এই ই-বুকটি পড়েনটি তারা এটি ডাউনলোড করে পড়ে নিবেন। আর
যাদের বই সংগ্রহ করার আগ্রহ বেশী তারা এটি প্রিন্ট আউট করে বুক বাইন্ডিং করে নিজের
লাইব্রেরীতে রেখে দিতে পারেন বা অন্যকে উপহার দিতে পারেন।
চলন্তিকা
ই-প্রকাশনাঃ সংখ্যা ১, আগস্ট ২০১৩, ঈদ সংখ্যা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন