রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৩

পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণের জন্য আইন নয়, চাই সচেতনতা


বর্তমান সরকার ‘‘পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১২’’ নামে একটি আইন করছে। যার কোন বাস্তব প্রয়োগ নেই। শুধু এই আইন কেন আমাদের দেশে কোন আইনেরই সঠিক প্রয়োগ নেই। যদি থাকতো তাহলে এতো অপরাধ আমাদের দেশে হতো না। যারা আইন তৈরি করে ও আইন প্রয়োগ করে তারাই আইন ভঙ্গ করে। আইন শুধু ফাইলের ভেতর বন্দী হয়ে থাকে। তাই আমি বলব বর্তমানে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ যে আইনটি আছে তার যেহেতু বাস্তব প্রয়োগ নেই, সেহেতু এই আইন দিয়ে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। এর জন্য চাই সামাজিক, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সচেতনতা। সচেতনতাই পারে পর্নোগ্রাফির কবল থেকে আমাদের তরুণ-তুরুণীদের রক্ষা করতে।

বর্তমানে চলচ্চিত্র, স্যাটেলাইট চ্যানেল, ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পর্নোগ্রাফি মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। এই সব পর্নোগ্রাফি ওয়েব সাইটগুলোতে তরুণ-তরুণীরা অবাধে প্রবেশ করতে পারছে। যার ফলে নৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয় দিন দিন বাড়ছে। বাড়ছে সামাজিক অপরাধ। বর্তমান ডিজিটাল যুগে মোবাইল ফোন হয়ে উঠেছে পর্নোগ্রাফির এক অন্যতম মাধ্যম। এর মাধ্যমে অতি সহজে তরুণ-তরুণীরা পর্নোগ্রাফি আদান প্রদান করতে পারছে। এটি ভাইরাসের মতো আমাদের সমাজের ছড়াচ্ছে। মোবাইল পর্নোগ্রাফি তরুণ-তরুণীদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয়। পর্নোগ্রাফির কারণে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর ফলে তাদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে উগ্র মানষিকতা। বর্তমানে ধর্ষণ নামক যে ব্যাধিতে আমরা ভোগছি তা এই পর্নোগ্রাফিরই অন্যতম একটি ফল। এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আমাদের তরুণ-তরুণীরা অচিরেই ধবংস হয়ে যাবে। পর্নোগ্রাফিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রথমে দরকার পর্নোগ্রাফি বিপনন বন্ধ করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ। ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফি সাইটগুলো বন্ধ করে দেয়া।
পর্নোগ্রাফি আসক্তি থেকে আমাদের কোমলমতি তরুণ-তরুণীদেরকে রক্ষা করতে হলে সবার আগে অভিভাবক মহলের সচেতনতার প্রয়োজন। আমরা সবাই যদি আমাদের নিজ নিজ সন্তানদেরকে ছোট বেলা থেকে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও নৈতিকতার শিক্ষা দেয় তাহলে দেখা যাবে কখনো এ অপরাধের সাথে তারা সম্পৃক্ত হবে না। আর সন্তান কৈশোর বয়স থেকে যৌবনে পর্দাপনের প্রতিটি ধাপে ধাপে বাবা-মাকে খেয়াল রাখতে হবে তাঁর সন্তান কোথায় যায়, কার সাথে মিশে, কম্পিউটারে কি নিয়ে সময় কাটায়, মোবাইল ফোনে কি দেখে বা কার সাথে কথা বলে। এসব পর্যবেক্ষণ করলে সন্তান কখনই পর্নোগ্রাফি অপরাধের সাথে জড়িত হতে পারে না। সামাজিক ও পারিবারিক সচেতনতার পাশাপাশি অত্যন্ত জরুরী যে বিষয়টা তা হলো ব্যক্তিগত সচেতনতা। এর কোন বিকল্প হতে পারে না। ব্যক্তিগত ইমেজ যাতে নষ্ট না যেদিকে সকলকে খেয়াল রাখতে হবে।

রচনাকালঃ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ খ্রি:

কোন মন্তব্য নেই: