বর্তমান সারা দেশে আবারও ডেঙ্গু আতংক বাড়ছে। সরকারি হিসেব মতে ২০০১ সালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৪৫ জন। ২০০২ সালে ৯৩ জন। ২০০৩ সালে ১০ জন ও বর্তমানে রাজধানীতেই জুন থেকে এর পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২৩০ জন।
একটি ক্ষুদ্র মশার দংশনে একটি মানুষের জীবন প্রদীপ নিভে যায়। এটা আমরা মানুষ হয়ে কিভাবে মেনে নিতে পারি। তাই এখনই উচিত ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ করা। তাই এখনই ডেঙ্গু জ্বর সর্ম্পকে অনেকের মধ্যে ভুল ধারণার বীজ বুনে গেছে। কেউ কেউ ডেঙ্গু জ্বরকে ছোঁয়াচে রোগ মনে করছেন। আবার কারো ধারণা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে স্পর্শ করা যাবে না। তারা মনে করে যে, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে স্পর্শ করলে তারও ডেঙ্গু জ্বর হবে। তাই এ জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে তারা পৃথক রাখতে চায়। আবার কেউ ধারণা করেন যে, ডেঙ্গু জ্বর একবার হলে আর এর জ্বর হবে না। আবার অনেকে মনে করেন এ জ্বরের জীবাণু বাতাসে ছড়ায়।
আসলে উপরোক্ত সবগুলো ধারণাই ভুল। প্রকৃত সত্য হচ্ছে আমাদের সকলকে জানতে হবে যে, ডেঙ্গু জ্বর আসলে কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। এ জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সাথে সব রকম মেলামেশা করতে পারবেন। এতে কোন অসুবিধা নেই। ডেঙ্গু জ্বর একবার হলে ভবিষ্যতে হতে পারে আবার নাও হতে পারে। এ জ্বরের জীবাণু বাতাসে ছড়ায় না। শুধুমাত্র ডেঙ্গু ভাইরাস আক্রান্ত এডিস মশার কামড়ে যে কোন ব্যাক্তি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হতে পারে। একমাত্র এডিস মশাই এ জ্বরের জীবাণু বহন করে থাকে। এখন যারা এ জ্বরকে নিয়ে আতংকে আছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলা যায়, আসলে এ রোগে আতংক হওয়ার কিছু নেই। গণসচেতনতাই এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে, এ রোগের কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তাই চিকিৎসার মাধ্যমে এ রোগ প্রতিরোধ করতে হলে আমাদেরকে কিছু কাজ করতে হবে। এডিস মশা সাধারণত ফুলের টবে, ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলের নর্দমা, ছোট কৌটা, গর্ত, ডোবা-নালা, ডাবের খোসা, জলাবদ্ধ স্থান, ফুলদানী, অব্যবহৃত টায়ার ইত্যাদি স্থানে জন্ম গ্রহণ করে থাকে। এডিস মশা যাতে বংশবৃদ্ধি না করতে পারে তাই উক্ত স্থানগুলো পরিষ্কার করতে হবে। বাড়ির আশে পাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কার রাখতে হবে। কিছুদিন পরপর মশার ঔষধ ছিটাতে হবে। এডিস মশা সাধারণত দিনের বেলায় কামড়ায়। তাই দিনের বেলা ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারী ব্যবহার করতে হবে।
উপরোক্ত কাজগুলো করলে আশা করা যায় আমরা কিছুটা হলেও ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ করতে পারবো। তাই আসুন আমরা সকলে মিলে মিশে ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে এগিয়ে আসি। কারণ ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ করার এখনই উপযুক্ত সময়।
প্রকাশকাল: বুধবার, ২৮ জুলাই ২০০৪ইং
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন