রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৩

ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বে ও ঘূর্ণিঝড়কালীন সময়ে আমাদের করণীয়

ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, ভূমিকম্প, মহামারী ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদের দেশের নিত্যদিনের ঘটনা। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগকে মোকাবেলা করেই আমাদেরকে বেঁচে থাকতে হবে। এই দুর্যোগ আসার পূর্বেই আমাদেরকে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে যাতে বিপদাপদ থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করা যায়। ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় মহাসেন বাংলাদেশে আঘাত এনেছে। এ কারণে চট্টগ্রামে ও কক্সবাজারে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে। এ ধরনের যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রেহায় পেতে কিংবা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে আমাদেরকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর দিকে নজর রাখতে হবে।


ঘূণিঝড়ের পূর্বে আমাদের করণীয়:

১. এজন্য যার যার বাড়িতে, রাস্তায়, বাঁধের উপর পর্যাপ্ত পরিমাণ গাছ লাগাতে হবে। যেমন- নারিকেল, বাঁশ, তাল কড়ই, আকাশী, মেহগনি ইত্যাদি শক্ত জাতীয় গাছ লাগানো। এসব গাছ ঘূর্ণিঝড়ের বেগ কমিয়ে দেয়। ফলে মানুষ দুর্যোগের কবল থেকে বাঁচার সম্ভাবনা থাকে। 
২. সম্ভাব্য দুর্যোগের পূর্বে এলাকার কোন কোন জায়গায় আশ্রয় কেন্দ্র আছে জেনে রাখতে হবে। যাতে দুর্যোগ শুরু হওয়ার পূর্বেই সেখানে পৌঁছা যায়। এতে করে অনেক সময় দুর্যোগের কবল থেকে বাঁচা যায়।
৩. আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পূর্বে জরুরী ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সাথে নিয়ে যেতে হবে।
৪. গবাদি পশু কোথায় থাকবে তা আগে থেকে জেনে নিতে হবে।
৫. আশ্রয় কেন্দ্র ও আবহাওয়া কেন্দ্র ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কেন্দ্রের টেলিফোন নাম্বার সাথে রাখতে হবে।
৬. সাথে রেডিও রাখতে হবে যাতে করে সবসময় আবহাওয়ার খবর জানা যায়।
৭. বাড়িতে সবসময় কিছু প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জম রাখতে হবে।
৮. ঘূর্ণিঝড়ের সময় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হতে পারে। তাই সাবধানে বিদ্যুৎ ব্যবহার করিতে হবে।
৯. উচুঁ স্থানে শক্ত করে ঘরবাড়ি তৈরী করুন। যাতে যেকোন বিপদাপদ থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
১০. উচুঁ জায়গায় টিউবওয়েল স্থাপন করুন।
১১. নারী-পুরুষ প্রত্যেকে সাঁতার শিখে রাখা জরুরী। 
১২. ডায়রিয়া, মহামারীর প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাবার সেলাইন বাসায় রাখুন।

ঘূর্ণিঝড়কালীন সময়ে আমাদের করণীয়:

১৩. বিপদসংকেত পাওয়া মাত্র উপকূলীয় এলাকার লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যাবেন।
১৪. পর্যাপ্ত পরিমাণ শুকনা খাবার, পানি, দিয়াশলাই, মোমবাতি, জামা-কাপড়, ছাতা ইত্যাদি সঙ্গে নিয়ে যাবেন। অথবা পলিথিন ব্যাগে ভরে গর্ত করে পুতে রাখুন। যাতে প্রয়োজনের সময় তা ব্যবহার করতে পারেন।
১৫. আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পূর্বে গাছপালার বড় ডালগুলো কেটে রাখুন। এতে করে গাছের ক্ষয়-ক্ষতি কম হবে।
১৬. ঘরে প্রয়োজনীয় জিনিস (দলিল, টাকা পয়সা, গয়না) পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকে জানিয়ে পলিথিন ব্যাগে ভরে মাটিতে পুতে রাখুন। 
১৭. আপনার ঘরগুলো পরীক্ষা করে দেখুন পিলারগুলো ঠিক আছে কিনা। যদি কোন সমস্যা থাকে তাহলে সবগুলো পিলার দড়ি দিয়ে শক্ত করে বেঁধে রাখুন।
১৮. গৃহপালিত পশু নিরাপদ স্থানে ও উচঁ স্থানে রাখুন। উচুঁ স্থান না পেলে ছেড়ে দিন। যাতে করে নিজেরা আত্মরক্ষা করতে পারে।
১৯. বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার সময় আগুন নিভিয়ে যাবেন।
২০. মোবাইল ফোন সাথে রাখতে হবে। চার্জ না থাকলে পূর্বেই চার্জ দিয়ে রাখতে হবে। প্রয়োজনে একাধিক ব্যাটারি রাখতে হবে। 
২১. ঘূর্ণিঝড়ের সময় যে বৃষ্টি হয় সে পানি আটকে রেখে পান করতে পারেন। কারণ বৃষ্টির পানি বিশুদ্ধ।

রচনাকালঃ ১৬ মে ২০১৩ খ্রি:

1 টি মন্তব্য:

Unknown বলেছেন...

সর্তকতামূলক পোষ্ট।