রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০১৬

বন্ধুব্লগ ঈদ সংখ্যা ই-বুক ২০১৪: একটি পর্যালোচনা

বন্ধুব্লগের আয়োজনে প্রকাশিত চতুর্থ -বুক বন্ধুব্লগ ঈদ সংখ্যা ই-বুক ২০১৪’’ খুব অল্প সময়ের মধ্যে নবীন ও পুরাতন ব্লগারদের লেখা নিয়ে ই-বুকটি প্রকাশিত হয়। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে সংকলনটিতে পিডিএফ ফরম্যাটে মোট ৩০ পৃষ্ঠায় ৩৭ জন লেখকের ৩৭টি লেখা স্থান পেয়েছে যার মধ্যে স্মৃতিকথা, ছড়া, কবিতা, রম্যরচনা ও ছোট গল্প ৫টি বিভাগে বিভিন্ন ধরনের বৈচিত্রময় লেখা থাকার কারণে সকল শ্রেণীর পাঠকের কাছে দারুণ একটি ঈদ উপহার হিসেবে গণ্য হয়েছে। কিন্তু ব্লগের সন্বয়হীনতার অভাবে কিছু ত্রুটির কারণে সার্বিক দিক বিবেচনা করলে ই-বুকটি আমার কাছে গ্রহযোগ্যতা পায়নি।
নিন্মে এই ত্রুটিগুলো তুলে ধরলাম।

১. বন্ধুব্লগ ঈদসংখ্যা ই-বুক-২০১৪ এর লেখক তালিকা(আপডেট)এই পোস্টে দীর্ঘদিন যাবত একটি প্রচ্ছদ দেখানো হয়েছিল কিন্তু সেটা কেন দেওয়া হল না তা জানি না। যেটা যদি নাই দেয়া হবে তাহলে সেটা কেন প্রকাশ হলো। প্রচ্ছদ ছাড়া কোন ই-বুক সুন্দর হতে পারে না। আমি অসংখ্য ই-বুক দেখেছি কিন্তু এমন প্রচ্ছদ বিহীন ই-বুক আর দেখিনি। এখানে প্রচ্ছদ হিসেবে যা দেখানো হয়েছে এটা কোন প্রচ্ছদ নয়। ঈদের শুভেচ্ছাবাণীসহ এই পাতাটি ফেসবুকের বিভিন্ন জায়গায় দেখেছি যা এখানে ব্যবহার করা হয়েছে। যা আমার দৃষ্টিতে মোটেও ঠিক হয়নি। এতে করে ই-বুকের সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে। বন্ধুব্লগে অনেক ভাল ডিজাইনার আছে যারা নি:স্বার্থভাবে এই ব্লগের জন্য প্রচ্ছদ বানিয়ে দিতেন। পরিচালক মহোদয় ‍তাদের সহযোগিতা নিতে পারতেন।
২. ই-বুকের জন্য কোন সম্পাদনা পরিষদ দেখতে পেলাম না। সম্পাদক কে এবং সার্বিক সহযোগিতা কারা করেছে তাদের কোন নাম দেখতে পেলাম না।
৩. প্রতিটি বইয়ে বা ই-বুকে সম্পাদকের কিছু কথা থাকে। সেটা সম্পাদকীয় নামে একটি পাতায় প্রকাশ করা হয়। এখানে এমন কোন সম্পাদকীয় পেলাম না। প্রথম পাতার নিচে কিছু কথা আছে কিন্তু এটা কার কথা তা স্পষ্ট নয়।
৪. লেখা খুঁজে বের করার জন্য প্রতিটি বইয়ে বা ই-বুকে সূচীপত্র আবশ্যক। কিন্তু এখানে তা পেলাম না। সূত্রীপত্র না থাকায় অনেকের লেখা খুঁজতে অসুবিধা হবে বলে আমি মনে করি। এখানে বন্ধুদের লেখা ও বন্ধুদের নামের তালিকা সিরিয়াল অনুযায়ী দেয়া হয়েছে। এখানে মোট ৩৭জন বন্ধুর লেখা স্থান পেয়েছে। কিন্তু কার লেখা কত পৃষ্ঠায় আছে তা উল্লেখ নেই।
৫. লেখার শিরোনামের পরে লেখকের নাম থাকলে অনেক ভাল হতো। শিরোনাম দুই সাইজ বড় এবং লেখকের নাম এক সাইজ বড় হলে সুন্দর দেখাত।
৬. লেখকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি থাকলে ভাল হতো। অনেকের লেখার নিচে ঠিকানা দেয়া হয়েছে। এটা দৃষ্টিকটু। ঠিকানা দিলে সবার লেখার নিচে দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।  
নতুন-পুরাতন ব্লগারদের লেখা নিয়ে বন্ধুব্লগ ঈদ সংখ্যা ই-বুক ২০১৪’’। ঈদকে কেন্দ্র করে ই-বুক হলে ঈদ সংক্রান্ত লেখা তেমন লক্ষ্য করা যায়নি। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় পাঠকদের আগ্রহ বিভিন্ন রকম হয় তাছাড়া প্রায় লেখাতেই বানানের সমস্যা লক্ষ্য করেছি। আমার মনে হয় ব্লগারদের লেখাগুলো এখানে হুবহু তুলে দেয়া হয়েছে। সম্পাদনা করে ই-বুকটি প্রকাশ করতে পারলে আরো ভালো হতো। বন্ধুব্লগ যেহেতু একটি নবীন ব্লগ সেহেতু এখানের লেখকরা বেশীরভাগ নবীন। দুয়েকজন প্রবীন লেখককে এখানে লক্ষ্য করেছি। এখানে ঈদ সংকলনে স্বল্প সময়ে উপস্থাপন করায় মানের প্রশ্ন তুলাটা হবে গৌণ। তা সত্ত্বেও কিছু কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ আছে সত্যিই উচুমানের। আমি ধন্যবাদ জানাই বন্ধুব্লগ পরিচালক মহোদয়সেহ সকল লেখককে যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে অল্প সময়ে এতগুলো লেখা সমন্বয় করে যথাসময়ে সংকলনটি প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছেন। ভবিষ্যতে বন্ধুব্লগ আরো সুন্দর ও আকর্ষণীয় ই-বুক প্রকাশ করবে এই আশা রাখি।
আমি একজন সাধারণ লেখক। লেখক হতে পেরেছি কিনা সেই বিচারের ভার আপনাদের হাতে ছেড়ে দিলামআমি আমার মতোই করে ই-বুকটির সমালোচনা করছি। তবু যেহেতু এটি একটি পর্যালোচনা সেহেতু চেষ্টা করেছি নিজের মতো করে সমালোচনা করতে। এতে যদি কারো মনে আঘাত লাগে তাহলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
পরিশেষে সবাইকে আমি অনুরোধ করব যারা এখনও এই ই-বুকটি পড়েনটি তারা এটি ডাউনলোড করে পড়ে নিবেন। আর যাদের বই সংগ্রহ করার আগ্রহ বেশী তারা এটি প্রিন্ট আউট করে বুক বাইন্ডিং করে নিজের লাইব্রেরীতে রেখে দিতে পারেন বা অন্যকে উপহার দিতে পারেন। 

কোন মন্তব্য নেই: