সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে শেষ হলো দশম জাতীয় সংসদ
নির্বাচন। কিন্ত এ নির্বাচন আমাদেরকে কি উপহার দিয়েছে। যে নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়
১৫৩জন প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে যায়। যে নির্বাচনে ৫৯ জেলায় বাকি ১৪৭ আসনে যে
চারকোটি ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮ জন ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েও তারা বেশির ভাগই ভোট দিতে
যায়নি। যে নির্বাচনে দেশের ৩৯টি কেন্দ্রে একটিও ভোট পড়েনি। যে নির্বাচনে দেশে ১৬টি
কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ১ থেকে ৬৩টি। যে নির্বাচনে দেশে ৫২ শতাংশ লোক প্রত্যক্ষ ভোট
দিতে পারে নাই। যে নির্বাচনে
জনগণকে তাদের ভোটের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করা হয়। যে নির্বাচনে বিদেশী কোন পর্যবেক্ষক নেই। যে নির্বাচনে ভারত ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোন দেশের সমর্থন নেই। যে নির্বাচনে ভোট গ্রহণের পূর্বেই নির্বাচিত হয়ে যায় কে হবে পরবর্তী সরকার। যে নির্বাচনে রাষ্ট্রপ্রতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, বিরোধীদলীয় নেত্রী ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেন মোহাম্মদ এরশাদ ভোট দেয়নি। যে নির্বাচনে সহিংসতায় ভোটের দিন ২৫ জন নিহত হয়েছে ও আহত হয়েছে শতাধিক নেতাকর্মী। যে নির্বাচনে ভোটের দিন স্বাধীনতার পর এটাই সবচেয়ে বেশী নিহতের ঘটনা। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন সারা দেশে সহিংসতায় মারা যায় ১২ জন। যে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে ১১১টি ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত স্কুল কলেজ আগুনে পুড়েছে। যে নির্বাচনে বিবেকবান সচেতন মানুষ ভোট দিতে যায়নি। যে নির্বাচনে কোথাও কোথাও প্রতি ছয় সেকেন্ডে একটি ভোট পড়েছে! যে নির্বাচনে ভোট কারচূপির অভিযোগ উঠে। যে নির্বাচনে দেশের জনগণ মিডিয়ার মাধ্যমে জালভোট প্রত্যক্ষ করে। যে নির্বাচনে আঠার বছরের কম বয়সী কিশোরদেরকে ভোট দিতে দেখা যায়। যে নির্বাচনে পাবনা-১ আসনে (বেড়া-সাঁথিয়া) দুটি স্থানে চারটি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থী স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর ছেলে ৪৭৫ ভোট দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড করেছেন!
জনগণকে তাদের ভোটের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করা হয়। যে নির্বাচনে বিদেশী কোন পর্যবেক্ষক নেই। যে নির্বাচনে ভারত ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোন দেশের সমর্থন নেই। যে নির্বাচনে ভোট গ্রহণের পূর্বেই নির্বাচিত হয়ে যায় কে হবে পরবর্তী সরকার। যে নির্বাচনে রাষ্ট্রপ্রতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, বিরোধীদলীয় নেত্রী ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেন মোহাম্মদ এরশাদ ভোট দেয়নি। যে নির্বাচনে সহিংসতায় ভোটের দিন ২৫ জন নিহত হয়েছে ও আহত হয়েছে শতাধিক নেতাকর্মী। যে নির্বাচনে ভোটের দিন স্বাধীনতার পর এটাই সবচেয়ে বেশী নিহতের ঘটনা। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন সারা দেশে সহিংসতায় মারা যায় ১২ জন। যে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে ১১১টি ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত স্কুল কলেজ আগুনে পুড়েছে। যে নির্বাচনে বিবেকবান সচেতন মানুষ ভোট দিতে যায়নি। যে নির্বাচনে কোথাও কোথাও প্রতি ছয় সেকেন্ডে একটি ভোট পড়েছে! যে নির্বাচনে ভোট কারচূপির অভিযোগ উঠে। যে নির্বাচনে দেশের জনগণ মিডিয়ার মাধ্যমে জালভোট প্রত্যক্ষ করে। যে নির্বাচনে আঠার বছরের কম বয়সী কিশোরদেরকে ভোট দিতে দেখা যায়। যে নির্বাচনে পাবনা-১ আসনে (বেড়া-সাঁথিয়া) দুটি স্থানে চারটি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থী স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর ছেলে ৪৭৫ ভোট দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড করেছেন!
সেই কলঙ্কিত নির্বাচন দিয়ে কি হবে দেশ ও জাতীর? রক্তের গঙ্গা
পাড়ি দিয়ে যে নির্বাচন সম্পন্ন হলো সে নির্বাচন কতটুকু সুফল বয়ে নিয়ে আসবে জনগণের
জন্য? ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে যে নির্বাচন সম্পন্ন হলো সে নির্বাচন দেশের মানুষকে
কতটা স্বস্থ্যি দিতে পারবে? যে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এত রক্ত ঝরলো বাংলাদেশের
শরীর থেকে। এত সম্পদহানী হলো বাংলাদেশের সে নির্বাচন আর্ন্তজাতিকভাবে কতটা গ্রহণযোগ্য
হবে?
৫ জানুয়ারি ২০১৪ সাল ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে কলঙ্কিত একটি
দিন হিসেবে। যেমনিভাবে লেখা ছিল ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন। এ নির্বাচনে
বিপুল সংখ্যাগরিষ্টার ফলে আবারও আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করলে এ সরকার হবে
আর্ন্তজাতিকভাবে একঘরে সরকার। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা পিছিয়ে যাবে বহুদূরে। এর
সরকারের ভবিষ্যৎ
কি জানি না। কতদিন টিকবে এ সরকার এ নিয়ে এখন সর্বমহলে প্রশ্ন। নতুন সরকার শপথ
নেয়ার পর সহিংসতা কমবে না বাড়বে এ নিয়ে জনগণ উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় দিনযাপন করছে।
কতিপয় উৎসাহি
আওয়ামীলীগের অনেক নেতা এখন বলাবলি করছে আগামী ২০১৯ সালের আগে বিরোধীদলের সাথে কোন
সমঝোতা হবে না। এসব কথা বলে দেশের মানুষকে আরো উৎকণ্ঠায় রাখছে
সরকারীমহল। যা আমরা কখনো কামনা করি না। আমরা চায় যত সম্ভব দুই নেত্রীকে এক টেবিলে
বসে এর একটা সুষ্ঠু সমাধান। এজন্য সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। তা না হলে এদেশের সামনে
ভয়াবহ সংকট অপেক্ষা করছে।
লেখক- উপন্যাসিক, কলামিষ্ট
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন