বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

আজ বসন্ত

আজ পহেলা ফাল্গুন বসন্তের প্রথম দিন।ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক, আজ বসন্ত।কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়-এর প্রকৃতিকে চ্যালেঞ্জ করা অমিয় বাণীটি ঋতুরাজকে আলিঙ্গনের আহ্বান জানায়। শীতের শেষে প্রকৃতিতে এসেছে মধু বসন্ত। চারদিকে রঙ্গের বিচিত্র সমারোহ। দক্ষিণা বাতাসে মৃদু হিল্লোল মনে জাগায় শিহরণ। গাছে গাছে আমের মুকুলসহ বিভিন্ন ফুল ফুটেছে। বাতাবী লেবুর গাছে ফুল ধরেছে। কোকিল গান গাইছে। নব পল্লবে যেন বাংলার আনাচে কানাচে
সবুজের সমারোহ। ফুলে ফুলে অলির গুঞ্জন। সব মিলিয়ে আনন্দময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। প্রকৃতি যেন আজ নববধু সাজে সেজেছে। আজ প্রকৃতি সেজেছে অপরূপ সাজে। ছড়িয়েছে নানা রঙ। এই রঙ ছড়িয়ে পড়বে বালার প্রতিটি জনপদে। শীতের বিবর্ণতা কাটিয়ে গাছে গাছে নতুন পাতা জাগতে শুরু করছে। ফুলে ফুলে সেজে ওঠেছে প্রকৃতি বসন্তের আগমনে প্রকৃতি সেজে ওঠে নতুনরূপে কৃষ্ণচূড়ার ডালে, কোকিলের কুহু-কুহু রবে, ফাগুন আসছে আগুন সাজে। ফাগুন হাওয়ায় দোল লেগেছে বাংলার প্রকৃতিতে। ফুলে ফুলে রঙিন হয়ে উঠেছে বাংলার সবুজ প্রান্তরএই ঋতুতে ফুলে ফুলে সাজতে শুরু করে প্রকৃতি। ষড়ঋতুর এই বাংলায় ১৬ কোটি মানুষ ঋতুরাজ বসন্তের বর্ণিলসব পালন করতে অপেক্ষায় থাকে সারা বছর ধরে
বাঙালির জীবনে নবপ্রাণের ছোঁয়া দিতে এ দিনটির কোন বিকল্প নেই। তাই তো এদিন কপোত-কপোতিরা নববসন্ত রঙে নিজেকে রাঙাতে ব্যাকুল হয়ে ওঠে। পোশাকে ঋতুরাজকে বসন্তকে ফুটিয়ে তুলতে মেয়েরা পরে বাসন্তী শাড়ি। ছেলেরা পড়ে হলুদ পাঞ্জাবি। আজ বর্ণিল সাজে সাজবে কপোত-কপোতি, প্রেমিক-প্রেমিকারা। প্রেমিকার মাথার চুলের খোঁপায় গোঁজা থাকবে পলাশ ফুল অথবা কৃষ্ণচূড়া ফুলের কুঁড়ি। গায়ে হলুদ আর বাসন্তী রঙের শাড়ি জড়িয়ে হাতে হাত রেখে তাঁরা বেড়িয়ে পড়বে অজানা পথে
প্রকৃতির এমন পাগল করা দিন গুলোয় কবিরা হন মূখর। তারা বসন্তকে বরণ করে লেখেন কবিতা। তেমনি করে কবি বেগম সুফিয়া কামাল লিখেছেন কোন এক বসন্তে তাহারেই পড়ে মনেকবিতাটি।
            হে কবি, নীরব কেন ফাগুন যে এসেছে ধরায়,
            বসন্তে বরিয়া তুমি লবে না কি তব বন্দনায়?’
            কহিল সে স্নিগ্ধ আঁখি তুলি-
            দক্ষিণ দুয়ারে গেছে খুলি?
            বাতাবী নেবুর ফুল ফুটেছে কি? ফুটেছে কি আমের মুকুল?
            দক্ষিণা সমীর তার গন্ধে গন্ধে হয়েছে কি অধীর আকুল?’
            ............................................................
            হোক,তবু বসন্তের প্রতি কোন এই তব তীব্র বিমুখতা?’
            কহিলাম, উপেক্ষায় ঋতুরাজে কেন কবি তুমি ব্যাথা?’
            কহিল সে কাছে সরি আসি-
            কুহেলী উত্তরী তলে মাঘের সন্ন্যসী-
            গিয়াছে চলিয়া ধীরে পুষ্পশূন্য দিগন্তের পথে
            রিক্ত হস্তে! তাহাড়েই পড়ে মনে, ভুলিতে পাড়িনা কোন মতে?’
বসন্ত তারুণ্যেরই ঋতু, তাই সবারই মনে বেজে ওঠে, কবির বাণী- ‘বসন্ত ছুঁয়েছে আমাকে। ঘুমন্ত মন তাই জেগেছে, পয়লা ফাল্গুন আনন্দের দিনে’।
আহা আজি বসন্তে/ কত ফুল ফোটে/ কত বাঁশি বাজে/ কত পাখি গায়...।পলাশ ফুটেছে, শিমুল ফুটেছে/ এসেছে দারুণ মাস।’- কবিতা আর গানের ছন্দের মতো করেই বাংলার প্রকৃতিতে এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত। সারা বছর ধরে বসন্ত প্রেমিকরা অপেক্ষায় থাকেন কবে আসবে পহেলা ফাল্গুন বারবার ফিরে আসে ফাল্গুন, আসে বসন্ত।

কোন মন্তব্য নেই: