শনিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৪

মুক্ত আলোচনা (পর্ব-০৩) আজকের বিষয়: মাহে রমযান

indexQran
আজ শুক্রবার। ছুটির দিন। যারা অবসর আছেন তারা চলে আসুন মুক্ত আলোচনার লাইভ আড্ডায়।

আজকের বিষয়: মাহে রমযান

আসুন আমরা মাহে রমযান নিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করি।


প্রতি বছর রহমত, মাগফিরাত ও নাযাতের বার্তা নিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থিত হয় মাহে রমযান। এই রমযান নিয়ে কোন স্মৃতিচারণ, গল্প, কবিতা থাকলে এখানে আলোচনা করতে পারেন। নিম্নে কাজী নজরুল ইসলামের একটি কবিতা দেয়া হল।

আমি গাহি তারি গান

কাজী নজরুল ইসলাম
 আমি গাহি তারি গান—-
দৃপ্ত-দম্ভের রে-যৌবন আজি ধরি অসি খরসান
হইল বাহির অসম্ভবের অভিযানে দিকে দিকে।
লক্ষ যুগের প্রাচীন মমির পিরামিডে গেল লিখে
তাদের ভাঙ্গার ইতিহাস-লেখ! যাহাদের নিঃশ্বাসে
জীর্ণ পুঁথির শুষ্ক পত্র উড়ে গেল এক পাশে!
যারা ভেঙ্গে চলে অপ-দেবতার মন্দির আস্তানা,
বক-ধার্মিক নীতি-বৃদ্ধের সনাতন তাড়ি-খানা।
যাহাদের প্রাণ-স্রোতে ভেসে গেল পুরাতন জঞ্জাল,
সংস্কারের জগদল-শিলা, শাস্ত্রের কঙ্কাল।
মিথ্যা মোহের পূজা-মন্ডপে যাহারা অকুতোভয়ে
এল নির্মম—মোহ মুদ্গর ভাঙ্গেনের গদা লয়ে।
বিধি-নিষেধের চীনের প্রাচীরে অসীম দুঃসাহসে,
দু’হাতে চালাল হাতুড়ি শাবল! গোরস্থানে চষে
ছুঁড়ে ফেলে যত সব কঙ্কাল বসাল ফুলের মেলা,
যাহাদের ভিড়ে মুখর আজিকে জীবনের বালু-বেলা।
গাহি তাহাদের গান
বিশ্বের সাথে জীবনের পথে যারা আজি আগুয়ান।—
— সেদিন নিশীথ-বেলা
দুস্তর পারাবারে যে যাত্রী একাকী ভাসালো ভেলা,
প্রভাতে সে আর ফিরিল না কুলে। সেই দুরন্ত লাগি
আঁখি মুছি আর রচি গান আমি আজিও নিশীথে জাগি
আজো বিনিদ্র গাহি গান আমি চেয়ে তারি পথ-পানে।
ফিরিল না প্রাতে যে-জন সে-রাতে উড়িল আকাশ-যানে
নব জগতের দূর-সন্ধানী অসীমের পথ-চারী,
যার ভয়ে জাগে সদা-সতর্ক মৃত্যু-দুয়ারে দ্বারী!
সাগর গর্ভে, নিঃসীম নভে, দিগদিগন্ত জুড়ে
জীবনোদ্বেগ, তাড়া করে ফেরে নিতি যারা মৃত্যুরে,
মানিক আহরি আনে যারা খুঁড়ি পাতাল যক্ষলপুরী,
নাগিনীর বিষ-জ্বালা সয়ে করে ফণা হ’তে মণি চুরি।
হানিয়া বজ্র-পানির বজ্র উদ্ধত শিরে ধরি,
যাহারা চপলা মেঘ-কন্যারে করিয়াছে কিঙ্কারী!
পবন যাদের ব্যজনী দুলায় হইয়া আজ্ঞাবাহী—
এসেছি তাদের জানাতে প্রণাম তাহাদের গান গাহি!
গুঞ্জরি ফেরে ক্রন্দন মোর তাকে নিখিল ব্যেপে—
ফাঁসির রজ্জু ক্লান্ত আজিকে যাহাদের টুঁটি চেপে!
যাহাদের কারাবাসে
অতীত রাতের বন্দিনী ঊষা ঘুম টুঁটি ঐ হাসে!
গাহি তাহাদের গান—-
ধরণীর হাতে দিল যারা আনি ফসলের ফরমান।
শ্রম-কিণাঙ্ক-কঠিন যাদের নির্দয় মুঠি-তলে
ত্রস্তা ধরণীর নজ্রানা দেয় ডালি ভরে ফুলে ফুলে!
বন্য-শ্বাপদ-শঙ্কুল জরা মৃত্যু ভীষণা ধরা
যাদের শাসনে হ’ল সুন্দর কুসুমিতা মনোহরা!
যারা বর্বর হেথা বাঁধে ঘর পরম অকুতোভয়ে
বনের ব্যাঘ্র মরুর সিংহ বিবরের ফণী লয়ে!
এল দুর্জয় গতি-বেগ সম যারা যাযাবর শিশু
তারাই গাহিল নব প্রেম গান ধরণী-মেরীর যিশু
যাহাদের চলে লেগে
উল্কার মত ঘুরিছে ধরণী শূন্যে অমিত বেগে!
খেয়াল-খুশিতে কাটি অরণ্য রচিয়া অমরাবতী
যাহারা করিল ধ্বংস সাধন পুনঃ চঞ্চলমতি,
জীবন-আবেগ রুধিতে না পারি যারা উদ্ধত-শির
লঙ্ঘিতে গেল হিমালয় গেল শুষিতে সিন্ধু-নীর!
নবীন জগত সন্ধানে যারা ছুটে মেরু-অভিযানে,
পক্ষ বাঁধিয়ে উড়িয়া চলেছে যাহারা ঊর্ধ্ব পানে!
তবুও থামে না যৌবন-বেগ জীবনের উলস্নাসে
চলেছে চন্দ্র মঙ্গল-গ্রহে স্বর্গে অসীমাকাশে।
যারা জীবনের পসরা বহিয়া মৃত্যুর দ্বারে দ্বারে
করিতেছি ফিরি, ভীম রণবুমে প্রাণ বাজি রেখে হারে।
আমি মোর-কবি-গাহি সেই বেদে বেদুঈনদের গান,
যুগে যুগে যারা করে অকারণ বিপ্লব-অভিযান।
জীবনের আতিশয্যে যাহারা দারুন উগ্রসুখে
সাধ করে নিল গরল-পিয়ালা, বর্শা হানিল বুকে।
আষাঢ়ের গিরি-নিঃস্রাব সম কোন বাধা মানিল না,
বর্বর বলি যাহাদের গালি পড়িল ক্ষলুদ্রমনে,
কূপ-মন্ডুক ‘অসংযমী’র আখ্যা দিয়াছে যারে,
তারি তবে ভাই গান রচে যাই বন্দনা করি তারে!
মানুষকে তার লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য চেষ্টা করতে হয়। চেষ্টা-সাধনা ছাড়া কোন কিছু অর্জন করা সম্ভব হয় না। ঠিক তেমনি ভাবে মহান আল্লাহর সান্নিধ্য পাওয়ার জন্যও প্রয়োজন যথাসাধ্য প্রচেষ্টা। এজন্য মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে কতিপয় কাজ নির্ধারণ করে দিয়েছেন এবং কেবল তাঁর ইবাদতের আদেশ দিয়েছেন। এর মধ্যে একটি বিশেষ ইবাদত হ’ল রামাযানের রোযা, যা আল্লাহ তাঁর বান্দার উপর ফরয করেছেন। আল্লাহ বলেন,

 يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِيْنَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ-

‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হ’ল, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীগণের উপর ফরয করা হয়েছিল, যাতে তোমরা সংযমশীল হ’তে পার’ (বাক্বারাহ ১৮৩)।
আলোচনা হতে পারে এতেকাফ নিয়ে।
এতেকাফের সংজ্ঞাঃ বিশেষ নিয়তে বিশেষ অবস্থায় আল্লাহ তা-আলার আনুগত্যের উদ্দেশ্যে মসজিদে অবস্থান করাকে এতেকাফ বলে।
এতেকাফের ফজিলত‍ঃ এতেকাফ একটি মহান ইবাদত, মদিনায় অবস্থানকালীন সময়ে রাসূল (স‍ঃ) প্রতি বছরই এতেকাফ  পালন করেছেন। দাওয়াত, তরবিয়ত, শিক্ষা এবং জিহাদে ব্যস্ত থাকা সত্ত্বেও রমযানে তিনি এতেকাফ ছাড়েননি। এতেকাফ ঈমানি তরবিয়তের একটি পাঠশালা এবং রাসূল (সঃ) এর হিদায়েতি আলোর একটি প্রতীক। এতেকাফরত অবস্থায় বান্দা নিজেকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য দুনিয়ার অন্যান্য সকল বিষয়  থেকে আলাদা করে নেয়।  ঐকান্তিকভাবে মশগুল হয়ে পড়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের নিরন্তর সাধনায়। এতেকাফ  ঈমান বৃদ্ধির একটি মূখ্য সুযোগ। সকলের উচিত এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের ইমানি চেতনাকে প্রাণিত করে তোলা ও উন্নততর পর্যায়ে পৌছেঁ দেয়ার চেষ্টা করা।
রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস মাহে রমযান‍ঃ পবিত্র মাহে রমযানে বান্দাহ তার মহান রব আল্লাহর পক্ষ থেকে লাভ করে অফুরন্ত রহমত, মাগফিরাত ও কৃত অপরাধের ক্ষমা এবং নাযাত।
কুরআন নাজিলের মাস‍ঃএ মাসেই মানবজীবনের পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান আল-কুরআন নাজিল হয়েছিল। তাই বাস্তব জীবনে কুরআনের বিধান অনুসরণের প্রচেষ্টা চালানো প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য।
ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্যের মাসঃ রমযান মাসে প্রত্যেক রোযাদার আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একে অপরের প্রতি সৌহার্দ্য-সহানুভূতি প্রকাশ করেন এবং দান-সাদকা ও মেহমানদারির মাধ্যমে পরস্পরের সাথে ভ্রাতৃত্ব-ভালোবাসা গড়ে তোলেন।
শপথের মাস‍ঃ কল্যাণের এ মাস মুমিন ব্যক্তি তার বিগত দিনের ভুলত্রুটির জন্য তাওবা করেন এবং আগামী দিনে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে চলার ও অন্যকে চালাবার প্রচেষ্টার শপথ গ্রহণ করেন।
রোযা আত্মগঠন ও মানোন্নয়নের মাস‍ঃ রোযা এক অনন্য ইবাদত, যা মানুষের সম্পর্ক বৃদ্ধি করে, রোযা আত্মসংযমের উদ্বুদ্ধ করে, সকল লোভ-লালসা ও স্বার্থপরতার মূলে আঘাত হানে। রোযা ইচ্ছাশক্তি বৃদ্ধি করে, সকল অলসতা, আরাম-আয়েশের জড়তা থেকে মুক্তি দেয়। রোযা ঈমানদার ব্যক্তির মধ্যে ন্যায়ের পক্ষে ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে কাজ করার আত্মচেতনা সৃষ্টি করে এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করার প্রেরণা জোগায়।
আলোচনা হতে পারে নজরুল ইসলাম এর হাম্‌দ ও না’ত নিয়ে। এখানে কাজী নজরুল ইসলামের এ হামদ দেওয়া হল।
00:00
00:00
আলোচনা হতে পারে সাহরী ও ইফতারের সময়সূচি নিয়ে। নিম্নে সাহরী ও ইফতারের সময়সূচি দেয়া হল।
Ramjan-1Ramjan-2Ramjan-3
আলোচনার সুবিধার্থে নিচে কয়েকটি রমযান সংক্রান্ত পোস্টের লিংক দিলাম।

রমজানের টুকিটাকি………  এই মেঘ এই রোদ্দুর

প্রশিক্ষণ, ধৈর্য্য ও আত্মসংযমের মাধ্যম হচ্ছে রোযা  আমির হোসেন

রোজা’র ফজিলত   বাংলার কলম

আলোচনা হতে পারে লায়লাতুল কদর নিয়ে। যে কদর নিয়ে সূরা কদর নাযিল হয়েছে। নিম্নে সূরা কদর বাংলা ও ইংরেজি অর্থসহ দেয়া হল।
সূরা কদর (মক্কায় অবতীর্ণ), আয়াত সংখ্যা 5

 

بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ

 

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

 

Ayahs:   | 1-5 |


 



 

إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ

 (1


আমি একে নাযিল করেছি শবে-কদরে।

 


We have indeed revealed this (Message) in the Night of Power:

 

 



 

وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ

 (2


শবে-কদর সমন্ধে আপনি কি জানেন?

 


And what will explain to thee what the night of power is?

 

 



 

لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍ

 (3


শবে-কদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।

 


The Night of Power is better than a thousand months.

 

 



 

تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِم مِّن كُلِّ أَمْرٍ

 (4


এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে।

 


Therein come down the angels and the Spirit by Allah.s permission, on every errand:

 

 



 

سَلَامٌ هِيَ حَتَّى مَطْلَعِ الْفَجْرِ

 (5


এটা নিরাপত্তা, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

 


Peace!…This until the rise of morn!


আসুন আমরা উপরের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করি। আলোচনার কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। আজ থেকে পরবর্তী পোস্ট প্রকাশ হওয়ার আগ পর্যন্ত আপনারা আলোচনা করতে পারবেন। যে কেউ যে কোন সময় আলোচনা আড্ডায় যোগ দিতে পারবেন। প্রতিটা আলোচনা আড্ডা থেকে আমরা কিছু শিক্ষণীয় বিষয় বের করে নিব। আলোচনা আড্ডা হবে নির্মল আনন্দের খোরাক। সকল ব্লগাররা সবার প্রতি সম্মান রেখে কথা বলবেন। কোন অশ্লীল বা সহব্লগারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে পারে এমন কথাবার্তা থেকে বিরত থাকবেন। যারা অবসর আছেন তারা চলে আসুন লাইভ মুক্ত আলোচনা আড্ডায়।
আজকে শুধুই বিষয় ভিত্তিক মুক্ত আলোচনা আড্ডা হবে। ভয়ের কিছুনাই, যারা আজকে মুক্ত আলোচনা আড্ডায় যোগ দিতে পারবেন না তারা হাজিরা দিয়ে চলে যান। কালকে, পরশু বা আরো পরে আসলেও কোন সমস্যা নেই। আপনার জন্য মুক্ত আলোচনার আয়োজন সবসময় খোলা থাকবে।তো আসুন মুক্ত আলোচনা আড্ডা দিয়ে মনকে ফ্রেস করি। একে অপরকে জানি। একে অপরের মতামত তু্লে ধরি।

কোন মন্তব্য নেই: