নাগরিক জীবনে প্রতিদির রুটিন ব্যস্ততায় কিছুটা একঘেয়েমি চলে আসে আমার জীবনে। শত কাজের ব্যস্ততায় আমি যখন হাঁপিয়ে উঠছিলাম, ঠিক তখন ভাবলাম আমার একটু বিশ্রামের প্রয়োজন। পরিবারকে একটু সময় দেয়ার দরকার। যেই ভাবনা সেই কাজ। একমাত্র মেয়ে আনিকা ও স্ত্রীকে প্রস্তাব দিলাম চলো আমরা পাঁচদোনা ড্রীম হলিডে পার্ক থেকে ঘুরে আসি। এই নাগরিক কোলাহল থেকে অন্তত অল্প সময়ের জন্য হলেও দূরে যাওয়া প্রয়োজন। নিজেদের মতো করে কাটাব সময়। আমার প্রস্তাবে তারা রাজি হয়ে গেল।
|
কৃত্রিম হাতির সামনে লেখকের মেয়ে আফরিন সুলতানা আনিকা |
দিনটি ছিল ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ খ্রি: রোজ শুক্রবার। দুপুর দুটোয় বাসা থেকে বের হলাম। দুপুর তিনটার দিকে আমরা ড্রিম হলিডে পার্কে প্রবেশ করলাম। প্রবেশ মূল্য জনপতি ২০০ টাকা। নরসিংদী শহর থেকে এত কাছে এই ড্রিম হলিডে পার্ক অথচ নাগরিক ব্যস্ততায় এতদিন আসা হয়নি। এখানে এত সুন্দর মনোরম পরিবেশ তাও আগে কল্পনা করিনি। আমার মেয়ে আনিকা পার্কে প্রবেশ করেই আনন্দে নেচে উঠল। পার্কের ভিতর যতই হাঁটছি ততই ভাল লাগছিল কিন্তু তখন প্রচ- গরম তাই হাঁটতে হাঁটতে আমরা হাঁপিয়ে উঠলাম। ঘেমে আমরা একাকার হয়ে গেলাম। তারপরও দেখার আনন্দে হাঁটছি। হাঁটার পাশাপাশি চলছিল আমার নিজস্ব ক্যামেরায় ছবি তোলা। হাঁটতে হাঁটতে আমরা একসময় ভূতের বাড়ি চলে আসলাম। এখানে প্রবেশ করতে চাইছিলাম কিন্তু ছোট্ট মেয়ে ভয়ঙ্কর আওয়াজ শুনেই ভয়ে কান্না করছিল তাই আর ওখানে যাওয়া হয়নি। তবে সে তখন বায়না ধরছিল রেলে চড়বে। পরিশেষে রেলে চড়েই তার আনন্দ ভ্রমণ শেষ করল।
|
এই ট্রেনে চড়েই বাড়ি ফিরল লেখের মেয়ে আনিকা |
লাল মাটির টিলা আর সবুজে ঘেরা নরসিংদী জেলার রূপের কমতি নেই। নরসিংদী জেলার অনেকগুলো দর্শনীয় স্থানের মধ্যে ড্রিম হলিডে পার্কটি অন্যতম। রাজধানী ঢাকার অদূরে সদর উপজেলায় গড়ে উঠেছে আর্ন্তজাতিক মানের বিনোদন কেন্দ্র ড্রিম হলিডে পার্ক। ২০০৭ সালে নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনা চৈতাব এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে প্রায় ৬০ বিঘা জমির উপর বিনোদন কেন্দ্র ড্রিম হলিডে তৈরির কাজ শুরু হয়। ২০১১ সালের শেষের দিকে এই পার্কটি আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। বিনোদন কেন্দ্রটিতে রয়েছে ছোট বড় সকলের জন্য রয়েছে আলাদা বিভিন্ন ধরনের রাইড। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ওয়াটার পার্ক, ফাইটার বোট, এয়ার বাই সাইকেল, ন্যাকেট ক্যাসেল, হ্যাপী ক্যাসেল, রর্কি হর্স, হ্যাপী স্লাইট ও গ্রাউন সীট। আরো রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ইমু পাখি, কৃত্রিম অভয়ারণ্য। এছাড়াও রয়েছে মধুরিমা ও মায়াবী নামের দুটি পিকনিক স্পট ও নান্দনিক পরিবেশে থাকার জন্য চারটি সুদৃশ্য কর্টেজ, সুইমিং পুল ও ওয়াটার পার্ক। দর্শনার্থীদের খাবারের জন্য রয়েছে বিশাল রেষ্টুরেন্ট, মিনি চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট ও কফি শপ, আইসক্রীম পার্লার। এর পাশাপাশি রয়েছে নারায়ণগঞ্জের বিখ্যাত ‘জামদানী হাউস’। পার্কের সামনে দুইশত গাড়ি রাখার পার্কিয়ের ব্যবস্থা।
|
মানব কঙ্কালের সাথে লেখক ও তাঁর মেয়ে |
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন